ডায়েটরি ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার
ডায়েটরি ফাইবার ( নন ডায়জেস্টেবল কার্বোহাইড্রেট )
এটি পলিস্যাকরাইড কার্বোহাইড্রেট । এটির প্রধান উৎস আঁশ জাতীয় খাবার।এই খাবার গুলো হজম হয়না কারন বিটা ১,১৪ গ্লাইকোসাইড এনজাইম ভাঙতে পারেনা।এটি সরাসরি অন্ত্রের মাধ্যমে মল হয়ে বেরিয়ে আসে।
ডায়েটরি ফাইবার যেভাবে কাজ করে ঃ
ডায়েটরি ফাইবারকে ২ভাগে ভাগ করা যায়।
১।সোলিবল ঃ এটি পানিতে দ্রবণীয় এবং পিচ্ছিল আকৃতি, দেখতে জেলের মত।এটি পানিতে আয়তন বৃদ্ধি পায়। সোলিবল খাবার গুলোর মধ্যে ওটা, মটর, মটরশুটি, আপেল, সাইট্রাস ফল, গাজর, বার্লি এবং সাইলিয়াম ইত্যাদি আঁশযুক্ত খাবারে পাওয়া যায়।
২।ইনসোলিবল ঃ এটি পানিতে অদ্রবণীয় এবং অপিচ্ছিল। মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং অন্ত্রের মধ্য দিয়ে দ্রুত মল পাস করতে সহায়তা করে।
দৈনিন্দন জীবনে নন ডাইজেস্টবেল কাবোহাইড্রট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া খুবুই প্রয়োজন। আমাদের শরীরকে সুস্বাস্থ্য রাখার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফাইবার যুক্ত খাবার রাখা দরকার।
ফলমূল সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে রাস্পবেরি,পিয়ারা,কলা,আপেল,কমলা,স্ট্রবেরি ইত্যাদি।প্রতিদিন ১টি ছোট পেয়ারা খেলে ৫.৫ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়।
শাকসবজি সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে সিদ্ধ মটরশুঁটি, সিদ্ধ ব্রকলি,সিদ্ধ শালগমের পাতা,ফুলকপি,সিদ্ধ ভুট্টা,গাজর,টমেটো প্রচুর ফাইবার রয়েছে। ১ কাপ সিদ্ধ মটরশুঁটিতে ৯.০ গ্রাম ফাইবার রয়েছে। প্রতিদিন কাপ মটরশুঁটি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ফল ও শাকসবজি খাওয়া হলে শরীরে ফাইবারের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন ও মিনারেলও গ্রহণ করা হবে। ফল কিংবা সবজি যে আলাদা করে অথবা কাঁচাই খেতে হবে এমন শর্ত নেই। স্যুপের সাথে অথবা সালাদ হিসেবে খেলেও কাজে দেবে।
যেসব ফল ও সবজি খোসাসহ খাওয়া যায় সেগুলো খোসা না ফেলে খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ খোসায় বেশি পরিমাণে আঁশ থাকে। তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোমতো ধুয়ে নিতে হবে।
গেন ফুড গুলোর মধ্যে লাল আটা,বার্ল, স্পাগহিতি( ইতালিয়ান লুডুস,আমাদের দেশে লুডুস হবে তবে মিনারেল সমৃদ্ধ হতে হবে),লাল চাল ইত্যাদি।১ কাপ বর্লিতে ৬.০ গ্রাম ফাইবার আছে।
বিচি জাতীয় খাবার ভিতরে এন্কার ডাল,সিমের বিচি,সিয়া সিড ইত্যাদি। ১ কাপ এনকার ডালে ১৬.০ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়। কাঠবাদাম ২৮ গ্রাম ৩.৫ গ্রাম ফাইবার আছে।
ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে পরিপাকতন্ত্রের রোগ যেমন ডায়রিয়া,কোষ্ঠকাঠিন্য,পেট ফাঁপা,গ্যাস,পাইলস ইত্যাদি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ডায়েটরি ফাইবারের উপকারিতা ঃ
১.হেমোরয়েড ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা যায়।
২.ডায়রিয়া প্রতিরোধে মূখ্য ভূমিকা পালন করে। (সলিবল ফাইবার)
৩.পরিপাকতন্ত্রের পেশি গুলোকে স্মুথ করে।
৪.হৃদযন্ত্রের রোগ যেমন খারাপ চর্বি,এমআই ইত্যাদি প্রতিরোধ করা যায়।
৫.টাইপ -২ ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
৬.ওজন কমাতে সাহায্য করে।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাছ-মাংসের পরিবর্তে বাদম,শস্য, ছোলা,ডাল খেতে হবে।
আঁশ জাতীয় খাবার খেলে শরীরে প্রচুর পানির দরকার পড়ে।কারণ আজ যুক্ত খাবার প্রচুর পানি শোষণ কর।
আমাদের লক্ষ্য যদি হয় স্বাস্থ্যসম্মত ওজন রক্ষা করা অথবা ওজন কমানো, তাহলে ফাইবার খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি, অধিক ক্যালরিযুক্ত ও চর্বি-জাতীয় খাবার খাওয়া কমাতে হবে।
Comments
Post a Comment
Thank you